বিএসএফ’র কারণেই নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি: অমিত শাহ

‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি, তার একটাই কারণ যে আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ানরা সীমান্তে পাহারা দিয়ে দেশকে রক্ষা করছে।’

বৃহস্পতিবার (৫ মে) ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হরিদাসপুরে বিএসএফ’র এক অনুষ্ঠানে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ কথা বলেন।

বিএসএফ’র প্রংশসা করে তিনি বলেন আমি যখনই বিএসএফ’র কোনো অনুষ্ঠানে আসি, সেখানে জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলি। আমি তখন নতুন শক্তি, প্রেরণা নিয়ে ফিরি। আপনারা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে যেভাবে সীমান্ত পাহারা দেন তা রাজস্থান হোক বা গুজরাটের কচ্ছ-সীমান্ত হোক বা সুন্দরবনই হোক।

‘অনুপ্রবেশ এবং চোরাকারবারিদের মোকাবিলা করে ২৪ ঘণ্টা যেভাবে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন, তার জন্যই দেশকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গোটা দেশ সবক্ষেত্রেই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে আমাদের সীমা সুরক্ষিত আছে।

তিনি বলেন, মোদী সরকারের মূল লক্ষ্যই হলো দেশের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করা। এতে যাতে কোনো ফাঁক না থাকে। এই কাজে জওয়ানদের আত্মত্যাগ আছে, সেই সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষার জন্য আমাদের কাছে যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আছে তার সঙ্গেও বিএসএফ’র পরিচয় ঘটাতে হবে। আর সে কারণেই আজ সমস্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন তিনটি বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) দেশের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হলো।

অবৈধ অনুপ্রবেশ, পাচারসহ সীমান্তে যে কোনো নাশকতা ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসনেরও সহায়তা চান অমিত শাহ। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া এই অনুপ্রবেশ এবং পাচার রোধ সম্ভব নয়। আমাদের বিশ্বাস অদূর ভবিষ্যতে সেই সহায়তা পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সেই সহায়তা মিলছে না, তবে আগামী দিনে সবাইকে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত সীমান্ত সুরক্ষিত রাখা ও চোরাকারাবরি এবং অনুপ্রবেশমুক্ত সীমান্ত গড়ে তোলা।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে, এই বেড়া কখনই দেশকে সুরক্ষা দিতে পারে না, যতক্ষণ না আমাদের বিএসএফের সদস্যরা তাকে সুরক্ষিত রাখছে।

এদিন হরিদাসপুরে ‘মৈত্রী সংগ্রহালয়’ নামক একটি মৈত্রী মিউজিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে অমিত শাহ বলেন, ভারত গোটা বিশ্বে মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সত্তরের দশকে যখন আমাদের প্রতিবেশী দেশে (বাংলাদেশ) মানবাধিকার হরণ হচ্ছিল, সেখানকার মানুষদের ওপর অত্যাচার হচ্ছিল এবং সেই অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে শরণার্থীরা যখন আমাদের দেশে আসে, সেসময় বিএসএফ এবং ভারতীয় সেনারা বীরত্বের সঙ্গে মানবাধিকার রক্ষা করেছিল এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিল।

তিনি বলেন সীমান্তে কাজ করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। সে কথা মাথায় রেখে সরকারও সবসময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে সীমান্তে দায়িত্বরত জওয়ানদের কষ্ট লাঘব হয়।

বিএসএফ’র নারী সদস্যদরে প্রশংসা করে অমিত শাহ বলেন পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারাও সমানভাবে সীমান্ত সুরক্ষার কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, মন্ত্রী নিশিত প্রামাণিক, বিরোধীদলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিএসএফ মহাপরিচালক পঙ্কজ কুমার সিং আইপিএস, এডিজি (ইস্টার্ন কমান্ড) যোগেশ বাহাদুর খুরানিয়াসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দুই দিনের সফরে বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে আসেন স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখান থেকে সোজা চলে যান উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। সেখানে তিনি বর্ডার এলাকা পরিদর্শন করেন। এরপর সুন্দরবনে ৬টি অত্যাধুনিক ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট (বিওপি) উদ্বোধন করেন।

শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোচবিহারে তিনবিঘা করিডর পরিদর্শন করবেন। এরপর বিকেলে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলির বাড়িতেও যাওয়ার কথা রয়েছে। পরে রাতেই কলকাতা থেকে দিল্লি ফিরে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইএ



https://ift.tt/veiB9lI
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/57CfZzw
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url