২৪ ঘণ্টায়ও নেভেনি আগুন, আবারও কনটেইনার বিস্ফোরণের আশঙ্কা

বাতাসে ভেসে আসছে লাশের গন্ধ, স্বজনদের কান্নার রোলে রাতেও ভারি হয়ে উঠছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের আকাশ। ইতোমধ্যে ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও গতকাল রাতে লাগা ভয়াবহ আগুন এখনো নেভেনি। এখনো জ্বলছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো। একটি কনটেইনারে আগুন জ্বলতে থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ বন্ধ রয়েছে। কারণ যেকোনো সময় কেমিক্যালের সংস্পর্শে এসে ওই কনটেইনার বিস্ফোরণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ভয়াবহ আগুন এটি। আগুনের বেগ ও হতাহতের সংখ্যাটাও বিশাল। পাশাপাশি আগুন নেভাতে যারা এগিয়ে গিয়েছিলেন তারা বিস্ফোরণের কাছে হার মেনে হয়েছেন লাশ। সেই ফায়ার ফাইটারদের চারজনের মরদেহের খোঁজ মেলেনি এখনো।

রোববার (৫ জুন) রাত ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের একাধিক গাড়ি ও দমকলকর্মীরা প্রস্তুত থাকলেও বন্ধ রয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ। কারণ হিসেবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি কনটেইনারে এখনো দাও দাও করে আগুন জ্বলছে। জ্বলন্ত কনটেইনারের একদম নিচের কনটেইনারে রয়েছে কেমিক্যাল।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবুল সালেহ জাগো নিউজকে বলেন, এখন আমাদের টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত থাকলেও একটি জ্বলন্ত কনটেইনারে আগুন লাগার কারণে নিয়ন্ত্রণ কাজ বন্ধ রয়েছে। আগুন যাতে না ছড়াতে পারে সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। কেমিক্যালের কনটেইনারটি পোড়ার পরেই আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ আবারও শুরু হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ফায়ার ফাইটার বলেন, না বুঝে কেমিক্যাল কনটেইনারে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আমাদের ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫ জন। এখনো একটি কেমিকেলযুক্ত কনটেইনার জ্বলছে যা বিস্ফোরণ হলে আবারও হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী। তবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানিয়েছেন, এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৫ জন নিহত ও ১৬৩ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করার সময় রাসায়নিক থাকা একটি কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে চার শতাধিক মানুষ আহত হন। তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।

রাতেই আহতদের অধিকাংশকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এছাড়া চট্টগ্রামের অন্যান্য হাসপাতালেও অনেককে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়।

টিটি/কেএসআর



https://ift.tt/k1XrbRH
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/6fsVZWY
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url