ফায়ার ফাইটার ফরিদের অপেক্ষায় ভ্যানচালক বাবা

জীবনের নানা কাঠখড় পুড়িয়ে কেবলই শুরু হয়েছিল নতুন দিনের, নতুন স্বপ্নের। কিন্তু সেই স্বপ্ন-সাধ পূরণের আগেই যেন আগুনে নিভে যেতে বসেছে ভ্যানচালক সাইফুল ইসলাম ও মা ফুলমতি বেগমের সব চাওয়া-পাওয়া।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ ফায়ার সার্ভিস কর্মী ফরিদুজ্জামান ফরিদের অপেক্ষায় বাড়িতে প্রহর গুনছেন মা-বাবাসহ স্বজনরা। একমাত্র ছেলেকে ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক সাইফুল ইসলাম ও ফুলমতি বেগমের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে ফরিদুজ্জামান ফরিদ বড়। মেয়ে সাবিহা আক্তার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

নিখোঁজ ফরিদের চাচা তোতা মিয়া জানান, ছোটবেলা থেকে ভীষণ মেধাবী ও শান্ত-নম্র ছিলেন ফরিদ।
দিনমজুরি করে ও ভ্যান চালিয়ে ছেলেকে পড়ালেখা করিয়েছেন তার বাবা। বছর দুয়েক আগে সীতাকুণ্ডে প্রথম চাকরিতে যোগ দেন ফরিদ। ছেলে চাকরি করলেও তার বাবা ভ্যান চালানো বন্ধ করেননি।
ইচ্ছে ছিল ছেলে আর একটু স্বাবলম্বী হলেই পেশা পরিবর্তন করে নতুনভাবে সব গুছিয়ে নিবেন। কিন্তু সে আশা-স্বপ্ন এখন ফিকে হতে বসেছে। ২৪ ঘণ্টা পরেও ছেলের সন্ধান না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা-বাবা।

কথা বলার মতো পরিস্থিতি নেই ফরিদের মা-বাবার। ছেলের কথা বলতে বলতে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন দুজনেই। চিকিৎসকের পরামর্শে স্যালাইন লাগানো হয়েছে।

রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফরিদ আহাম্মদ চৌধুরী বলেন, বছর দুয়েক আগে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফায়ার ফাইটার (সিপাহি) পদে যোগ দেন ফরিদুজ্জামান ফরিদ। শনিবার (৪ জুন) রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর থেকে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

এদিকে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিসকর্মী। তবে ফায়ার সার্ভিসের আরও অন্তত চার কর্মী নিখোঁজ আছেন। এরমধ্যে একজন রংপুরের ফরিদুজ্জামান ফরিদ।

জিতু কবীর/কেএসআর



https://ift.tt/wb7vAVG
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/uZWGea1
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url