ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ে নাকাল ঘরমুখো মানুষ। নির্ধারিত সময় থেকে ৩০ মিনিট পর, কোনো কোনোটা আবার ১ থেকে ৩ ঘণ্টা পরও কমলাপুর থেকে ছেড়েছে। এছাড়া শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গের প্রায় সবগুলো ট্রেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো ঘরমুখো মানুষ।

শুক্রবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকেই বেশ কয়েকটি ট্রেন‌ শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল আটটায় ছাড়ার কথা থাকলেও দশটায় দেওয়া হয় সম্ভাব্য সময়। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও কখন ছাড়বে তা জানানো হয়নি ট্রেন ছাড়ার সময়সূচিতে। রাজশাহীগামী সিল্ক সিটি দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি সন্ধ্যা ছয়টায় ছাড়ার সম্ভাব্য সময়সূচি দেওয়া হয়। খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস সন্ধ্যা সাতটায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পারেনি। এদিকে পঞ্চগড় গ্রামে দ্রুতযান এক্সপ্রেস রাত আটটায় ছাড়ার কথা। কিন্তু ট্রেনটির সম্ভাব্য ছাড়ার সময় বলা হয় রাত তিনটায়। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের রাত আটটা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল। কিন্তু সেই ট্রেনটি ও কখন আসবে তা জানাতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। এতে যাত্রীদের স্টেশনেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা। ফলে ঈদ যাত্রায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ঘরমুখো মানুষ।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মেহেদী হাসান। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে বিকেল চারটায় রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসেন তিনি। এর আগে ১৩ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কেটে শুক্রবার বিকেল চারটায় দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বাড়ি যাওয়ার জন্য কমলাপুরে আসেন তিনি। কিন্তু রাত আটটার ট্রেন তিনটায় আসার কথা শুনে অনেকটা বিরক্তি প্রকাশ করেন।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি।‌ ট্রেন ছাড়ার কথা ৮ টায়।‌ কিন্তু এখন শুনি রাত ৩ টায় ছাড়বে। এখনো ট্রেন‌ নাকি আসেনি। ট্রেনে যেতে লাগে ১০ থেকে ১১ ঘণ্টা। আর এখন ট্রেনের জন্যই আট-দশ ঘণ্টা স্টেশনেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

নওগাঁ যাওয়ার জন্য আজিমপুর থেকে আসা সবুজ হোসেন বলেন, ট্রেনে ১ থেকে ২ ঘণ্টা দেরি হলে মানা যায়। কিন্তু ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা দেরি হলে সেটা মানা যায় না। তাও যদি হয় রাতের বেলা। রাতের বেলা অনেক সমস্যা হয়। ছেলে-মেয়ে বাচ্চাদের নিয়ে এসেছে রাতে ঘুমানো কিংবা খাবারের জন্য চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

ঠাকুরগাঁওয়ে যেতে বিকেল থেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন সাবিনা ইয়াসমিন। ৬ ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও ট্রেন না আসায় বিরক্তি প্রকাশ করে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বাসে দীর্ঘ জ্যাম থাকে তাই ট্রেনে যেতে চাচ্ছি। রাত আটটার ট্রেন শুনি এখন রাত তিনটায় আসতে পারে তাও সিউর না।

কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে যাবেন মোস্তাকিনা খাতুন। ৫ ঘন্টা অপেক্ষার পরও রাত পৌনে নয়টায় ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও ট্রেন কখন ছাড়বে তা জানেন না তিনি। এ সময় জাগো নিউজকে তিনি বলেন, শুনেছি ট্রেন এখনো আসেনি। ৯টা বেজে গেলেও সময়সূচিতে এখনো ট্রেন কখন ছাড়বে তার কিছুই বলা নেই।

ট্রেনের এ সময়সূচি বিপর্যয়ের বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত যাত্রীর কারণেই ট্রেন যথাসময়ে পৌঁছাতে পারছে না। ফলে গন্তব্যস্থল থেকে ট্রেনগুলো কমলাপুরে আসতে অনেক সময় লাগছে।

আরএসএম/এমএএইচ/



https://ift.tt/7Jp0adf
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/1TRXCcq
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url