শুভ জন্মাষ্টমী আজ

সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি। গত বছর অনেকটা ঘরোয়াভাবে জন্মাষ্টমীর আয়োজন করা হলেও এবার থাকছে সমাবেশ, শোভাযাত্রাসহ মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তদের আমন্ত্রণ।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, প্রায় সাড়ে ৫ হাজার বছর আগে দ্বাপর যুগে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এদিনে এক যুগ-সন্ধিক্ষণে আবির্ভূত হিন্দুধর্মের প্রবর্তক ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কংসের কারাগারে বন্দি দেবকী ও বাসুদেবের বেদনাহত ক্রোড়ে জন্ম নিয়েছিলেন।

অত্যাচারী ও দুর্জনের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় সাধুজনের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কংসের কারাগারে জন্ম নেন তিনি। শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমনে শ্রীকৃষ্ণ ব্রতী ছিলেন। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ তাই ভগবানের আসনে অধিষ্ঠিত। শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উদযাপন উপলক্ষে প্রতি বছর বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশেষ এ দিনটিতে উপবাস, পূজা-অর্চনা ও নামকীর্তনসহ বিভিন্ন আচার-উপাচার পালন করবেন। এছাড়া ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

প্রতি বছরের মতো এবারও জন্মাষ্টমী উদযাপন ঘিরে কেন্দ্রীয়ভাবে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নানা কর্মসূচি নিয়েছে। রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকনসহ বিভিন্ন মন্দিরে অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন পরোপকারী, প্রেমিক, রাজনীতিক ও সমাজ সংস্কারক। সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। যেখানেই অন্যায়-অবিচার এ ধরাধামকে গ্রাস করেছে সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছেন আপন মহিমায়।

সনাতন ধর্ম মতে, অধর্ম ও দুর্জনের বিনাশ এবং ধর্ম ও সুজনের রক্ষায় তিনি যুগে যুগে পৃথিবীতে আগমন করেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের মহান ঐতিহ্য। জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনে সবাইকে সম্মিলিতভাবে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সোহার্দ্য অটুট রাখতে হবে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর আয়োজন আরও উৎসবমুখর হয়ে উঠুক-এ প্রত্যাশা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন ও সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের লক্ষ্য। তিনি আজীবন শান্তি, মানবপ্রেম ও ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। শ্রীকৃষ্ণ তার জীবনাচরণ এবং কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের আরাধনা করেছেন।

এদেশে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সোহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে।

জন্মাষ্টমী ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা-অর্চনা, তারকব্রহ্ম হরিনাম সংকীর্তন ও তারকব্রহ্ম নামযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে ষোড়শ উপচারে পূজা শেষ করে প্রসাদ বিতরণ ও ধর্মীয় আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সকাল ৮টায় মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ, দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে আলোচনা সভা।

আরএসএম/এমআরএম



https://ift.tt/4uRy8Av
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/faOke1s
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url