২০ ওভারের খেলায় ‘২২ ওভার’ করেই হারলো বাংলাদেশ!

ইনিংসের সপ্তম ওভারের শেষ বল। শেখ মেহেদি হাসানের ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি বড় শট খেলতে গিয়ে ব্যর্থ কুশল মেন্ডিস। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়লো উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। আম্পায়ার আঙুল তোলার আগেই উদযাপনে মাতলেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা, আম্পায়ারও তাতে বাঁধ সাধেননি, তুলে দেন আঙুল।

কিন্তু সেই উদযাপন থামিয়ে দেন থার্ড আম্পায়ার। রিপ্লে দেখে জানিয়ে দেন বলটি করার সময় পপিং ক্রিজের ভেতরে ছিল না মেহেদির পা। যে কারণে হয়েছে নো বল, ক্যাচ আউট হয়েও বেঁচে যান কুশল মেন্ডিস। মাত্র ২৯ রানে জীবন পাওয়া মেন্ডিস পরে খেলেছেন ৬০ রানের ইনিংস, দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের কাছে।

শুধু মেন্ডিসকে বাঁচিয়ে দেওয়াই নয়, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওয়াইড ও নো বলের পসরা সাজিয়েই শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হেরে গেছে বাংলাদেশ। পুরো ইনিংসে ১৯.২ ওভার বৈধ ডেলিভারির সঙ্গে ১০টি বোনাস ডেলিভারিও করেছে বাংলাদেশের বোলাররা। যা প্রায় দুই ওভারের সমান।

অর্থাৎ ২০ ওভারের খেলায় ২২ ওভার হাত ঘোরাতে হয়েছে টাইগারদের। এর পেছনে পুরো দায় অভিষিক্ত পেসার এবাদত হোসেন চৌধুরী ও মেহেদি হাসান। প্রথমে নো বল করে মেন্ডিসকে জীবন দিয়েছেন মেহেদি। পরে ইনিংসের শেষ ওভারের তৃতীয় বলটি আবারও নো করে ম্যাচই শেষ করে দেন এ ডানহাতি অফস্পিনার।

আর মাঝের সময়ে অতিরিক্ত রান দেওয়ার উদারতা পুরোটাই এবাদতের। নিজের অভিষেক টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে প্রথম দুই ওভারে মাত্র ১৩ রান খরচায় তিন উইকেট নিয়ে স্বপ্নিল শুরু করেন এ ডানহাতি পেসার। তার হাত ধরেই শুরুতে লঙ্কানদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। মনে হচ্ছিল, অভিষেক ম্যাচটি স্বরণীয়ই করে রাখবেন এবাদত।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর স্মরণীয় হয়নি, হয়েছে ভুলে যাওয়ার মতো। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ১৩ রান দেওয়া এবাদত, পরের দুই ওভারে দিয়েছেন ৩৮ রান। শুধু রান খরচার জন্যই নয়, নিজের চার ওভারের স্পেলে ৩২টি বল করেছেন এবাদত। অর্থাৎ ওভারপ্রতি ছয় বলের বদলে করেছেন ৮টি করে বল।

এবাদতের শেষ দুই ওভারেই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। শেষ ৮ ওভারে ৮৯ রানের সমীকরণে বল হাতে নিয়ে ১৩তম ওভারে ২২ রান খরচ করেন এবাদত। সেই ওভারে দুইটি ওয়াইড ও একটি নোসহ মোট ৯টি বল করেন তিনি। পরে দুই ওভারে ২৫ রানের সমীকরণে মহাগুরুত্বপূর্ণ ১৯তম ওভারটি দেওয়া হয় এবাদতকে।

সেই ওভারে আবারও অতিরিক্ত দুইটি বল করেন এবাদত, পুরো ওভারে আটটি বল করে ১৭ রান দিয়ে যান তিনি। যার ফলে শেষ ওভারে বাকি থাকে মাত্র ৮ রান। যা করতে কোনো সমস্যাই হয়নি শ্রীলঙ্কার লেজের সারির ব্যাটারদের। সবমিলিয়ে অভিষিক্ত এবাদত ৪ ওভারে খরচ করেছেন ৫১ রান। যা বাংলাদেশি বোলারদের অভিষেকে সর্বোচ্চ রান খরচের ঘটনা।

ম্যাচ হারের পেছনে এবাদত-মেহেদির ওয়াইড ও নো বলের পসরা সাজানোকে আরও বেশি দায়ী মনে হবে, যখন জানবেন বাংলাদেশের পুরো ২০ ওভারে একটিও অতিরিক্ত বল করেনি শ্রীলঙ্কা। তারা ২০ ওভারে বাই ও লেগবাই থেকে দিয়েছে ১০ রান। কিন্তু একটিও ওয়াইড বা নো বল করেনি। শেষ পর্যন্ত তারাই হেসেছে বিজয়ীর হাসি।

এসএএস/এমকেআর



https://ift.tt/sTQzYrq
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/uzVJwSX
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url