প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মমর্যাদা বাড়ানোর উদ্যোগ
‘প্রতিটি মানুষের আছে আত্মমর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার’। বৈশ্বিক আত্মমর্যাদা বা গ্লোবাল ডিগনিটি’র এ প্রতিপাদ্যে চরাঞ্চলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে আত্মমর্যাদা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং তা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’। এরই আংশ হিসেবে গাইবান্ধা জেলায় যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের চর বাটিকামারী ‘ফ্রেন্ডশিপ’ স্কুলে আয়োজন করা হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও কর্মশালা।
চরের স্কুল শিশুদের সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিতে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও কর্মশালা পরিচালনা করেন চারুপুথির প্রতিষ্ঠাতা চিত্রশিল্পী এহসান প্রতীক। এতে অংশ নেয় যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের প্রত্যন্ত চরে অবস্থিত ‘ফ্রেন্ডশিপ’ স্কুলের ২০ ছাত্র-ছাত্রী। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা পরবর্তী আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেয় চর বাটিকামারীতে ‘ফ্রেন্ডশিপ’ পরিচালিত তিন বিদ্যালয়ের প্রায় ৩’শ শিক্ষার্থী।
প্রত্যেকের অধিকার; মর্যাদাপূর্ণ জীবন-যাপন’ এই স্লোগানে ছাত্র-ছাত্রীদের চিত্রাঙ্কনে উঠে আসে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একে অপরের প্রতি সহিষ্ণুতা, বৈষম্য এবং অসামাজিকতা দূর করার অঙ্গীকার।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন- চারুপুথির চিত্রশিল্পী মো. মুজিব হোসেন, ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র রিজিওনাল ম্যানেজার আনোয়ারুল ইসলাম, রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর আবদুস সালাম, সিনিয়র ম্যানেজার (গ্রাফিক্স) সুমন ঘোষ, ম্যানেজার (মার্কেটিং) মীর আফ্রাদ আকিব এবং ম্যানেজার (পিআর অ্যান্ড কন্টেন্ট) জিলফুল মুরাদ শানু।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ২০ বছরে সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’ এর সাফল্য তুলে ধরা হয়। এ সময় ফ্রেন্ডশিপ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রশংসা করেন চিত্রশিল্পী এহসান প্রতীক। আগামীতে জনকল্যাণমূলক কাজে ফ্রেন্ডশিপের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাসও দেন বিশিষ্ট এই চিত্রশিল্পী।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা পরিত্যক্ত প্রকৃতিক সম্পদ যেমন-খড়কুটা, পাঠখড়ি, গাছের বাকল ও পাতা ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে নানান শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তোলে। এছাড়াও শিশুদের আঁকা রং-তুলিতেও সাদা ক্যানভাস ফুটে ওঠে শ্যামল বাংলার চিত্র।
বিশেষ করে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদী অঞ্চলে প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ভাসমান হাসপাতাল, উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগরে ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল, জলবায়ু ও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্লিন্থ নামে বিশেষ আশ্রয়কেন্দ্র, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, বনায়ন, সৌরগ্রাম, সুশাসন, বাল্য বিয়ে ও যৌতুক প্রতিরোধ, ভ্রাম্যমাণ স্পোর্টস লাইব্রেরি, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা, এদেশের নৌকা সংস্কৃতি সংরক্ষণ, চর তাঁতীদের নিয়ে টেকসই ফ্যাশন ব্র্যান্ড, ইত্যাদি সফলতা উঠে আসে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং আলোচনায়।
ফ্রেন্ডশিপের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক বলেন, গত ২০ বছর ধরে, আমার মিশন ও ভিশন হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টেকসইতা নিশ্চিত করতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস দেওয়া। তাহালো- সুযোগ, মর্যাদা এবং আশা। আমরা এটি কমিউনিটিতে নিশ্চিত করছি, আমরা আশা করতে পারি যে পরে তারা আমাদের ছাড়াই চলবে এবং চালিয়ে যেতে পারবে।
চিত্রশিল্পী এহসান প্রতীক বলেন, শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ এই কথা না বলে আমরা এখন থেকে বলবো শিশুরা আমাদের অহংকার। চর বাটিকামারীর ফ্রেন্ডশিপ স্কুলের শিশুদের চোখে আমি যে স্বপ্ন দেখেছি তা তাদের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করবে বলে বিশ্বাস করি।
এমআরএম
https://ift.tt/bAS6dIL
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/0O1pzh8
via IFTTT