প্রতি কিলোমিটার ড্রেন উন্নয়নে ব্যয় বেড়ে ২ কোটি

এক কিলোমিটার ড্রেন উন্নয়নে দুই কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। তুলনামূলকভাবে ব্যয় অনেক বেশি বলে দাবি পরিকল্পনা কমিশনের। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত সংস্কারের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ ব্যয় চাওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়— রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়ন প্রকল্পের চেয়ে ড্রেন নির্মাণে খরচ প্রতিবছরই বাড়ছে। ঢাকা দক্ষিণে নর্দমা বা ড্রেন নির্মাণে ৬৭ দশমিক ৫৬ কিলোমিটারে খরচ হয় ৪১ কোটি ২৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এখানে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ৫৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। ঢাকা উত্তরে ৪৬ দশমিক শূন্য ২২ কিলোমিটারে ২১ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এখানে কিলোমিটারে ব্যয় হয়েছে ৪৬ লাখ ১২ হাজার টাকা। আর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলডিইডি) ১৬ দশমিক ১৬৯ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণে ব্যয় করেছে ছয় কোটি ৮৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। এখানে কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ৪২ লাখ ৫২ হাজার টাকা।

স্থানীয় বিভাগের এবং সিটি করপোরেশনের অনেক প্রকৌশলী রয়েছে। তারপরও প্রায় ৫ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে পরামর্শক খাতে। ঢাকা উত্তর সিটির বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত সংস্কারের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজে প্রতি মাসে প্রায় ১৪ লাখ টাকা খরচ কতে হবে পরামর্শকদের পরামর্শ নিতে। এতে তিন বছরে ব্যয় হবে প্রায় ৫ কোটি টাকা। অথচ প্রতিটি অঞ্চলেই প্রকৌশলী রয়েছে। প্রতি কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়নে ৩ দশমিক ২৭ কোটি টাকা, প্রতি কিলোমিটার ড্রেন উন্নয়নে ২ কোটি টাকা এবং প্রতি কিলোমিটার ফুটপাত উন্নয়নে ৬০ দশমিক ১৫ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। পরামর্শক খাতে খরচের ব্যাপারে পরিকল্পনা কমিশন থেকে এক বছর আগেও আপত্তি তুলেছিল। এখনো তারা আপত্তি করছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের দেওয়া প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে— চারশ’ বছরের ঢাকা শহরকে মেগাসিটি বলা হলেও পরিকল্পিত শহরের কোনো বৈশিষ্ট্য এখানে বিদ্যমান নেই। যেমন পর্যাপ্ত সড়ক, পরিবহন অবকাঠামো, গণপরিবহন সুবিধা, সামাজিক পরিবেশ সেবা প্রভৃতি। ১৯৭৪ সালে যেখানে এ শহরের জনসংখ্যা ছিল ১৬ লাখ। এখন সেই জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে দেড় কোটি। বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শতকরা প্রায় ৪ শতাংশ। যা এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ঢাকা শহরে সড়কের পরিমাণ মোট আয়তনের ৭ শতাংশ। যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ২৫ শতাংশের তুলনায় অনেক নিম্নে। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিত নগরায়নের সামঞ্জস্য নেই। অপর্যাপ্ত রাস্তা ছাড়াও বিদ্যমান রাস্তাগুলোর অবস্থা অধিকাংশেই শোচনীয়।

আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে পটুয়াখালী কিসের জন্য বিখ্যাত ? এই আর্টিকেলটি আপনি চাইলে পড়তে পারেন।

বিস্তারিত আমাদের ওয়েবসাইটে- NewSeason24

সিটি করপোরেশন বলছে— চার বা পাঁচ বছর পর পর এসব রাস্তা, নর্দমা রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। এ করপোরেশনের আওতায় ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার সড়ক ও ১২০০ কিলোমিটার ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক বিদ্যমান। দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা সড়কের অবস্থা দ্রুত খারাপ করে ফেলে। বছরে ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার রাস্তা সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে উন্নয়ন করা সম্ভব হয়। যার কারণে অধিকাংশ রাস্তা ও নর্দমা মেরামতের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত থেকে যায়। ভোগান্তির শিকার হয় নগরবাসী।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো— ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার সড়ক, নর্দমা ও ফুটপাত উন্নয়ন করা। আর সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ লাইন নির্মাণ করা। প্রকল্প এলাকার ফুটপাত উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে পথচারীদের চলাচল সুগম করা। বলা হচ্ছে— প্রকল্পটি সমাপ্ত ৩০ শতাংশ সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন, ৪০ শতাংশ জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। পাশাপাশি ১৫ শতাংশ পথচারীদের যাতাযাতের সুবিধা বাড়বে।

প্রকল্পের আওতায় কাজগুলো হলো— উত্তর সিটির নির্ধারিত এলাকার ১২১ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন, ২১৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার নর্দমা উন্নয়ন ও সার্ভিস প্যাকেজ এবং ৮০ দশমিক ২৬ কিলোমিটার ফুটপাত উন্নয়ন। পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন ৬টি আর্চ ব্রিজ এবং একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ করা হবে। ঢাকা উত্তর সিটির ২০১৯ সালের রেট শিডিউল ধরে প্রকল্পের প্রতিটি খাতের খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছে।

এসওএম/এমএএইচ/



https://ift.tt/E6nbGpg
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/CUxwcMn
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url