বিডার ওয়েবসাইটে মিলবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আট সেবা

সবার সুবিধার্থে একই ওয়েবসাইটে সব সেবা (ওয়ান স্টপ) দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা)। এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে বিডার ওয়েবসাইটে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের আট সেবা পাওয়া যাবে। এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে আরও তিন বাণিজ্যিক ব্যাংক।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পাঁচ পক্ষের মধ্যে চুক্তি সই হয়। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া। উপস্থিত ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরশেদুল কবীর, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এবং কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের কান্ট্রি ডিরেক্টর।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে আট সেবা বিডার ওয়েবসাইটে পাওয়া যবে তার মধ্যে রয়েছে- অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় মেয়াদি ঋণ গ্রহণের অনুমতি, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার দেশ থেকে বিদেশে, বিদেশ থেকে দেশে এবং বিদেশ থেকে বিদেশে হস্তান্তরের অনুমোদন, বিদেশ থেকে কোনো কোম্পানির লভ্যাংশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা। এছাড়াও মিলবে পরামর্শক ফি বিদেশে পাঠানোর অনুমতি। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির বিদেশি মালিকের শেয়ার দেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে অর্থ বিদেশে নেওয়ার অনুমোদন, দেশে অবস্থিত বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের অর্থ পুনরায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে পরিশোধের সুযোগ, দেশে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে অবশিষ্ট অর্থ বিদেশে পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া এই সেবার অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ঘরে বসেই অগ্রণী ও মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে বিডার অনলাইন সেবার মাধ্যমে। কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা স্বল্প সময়ের জন্য অনলাইন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন একই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আগামী চার বছরের মধ্যে পুরোপুরি না হলেও ৭৫ শতাংশ লেনদেন অনলাইনভিত্তিক (ক্যাশলেস) হবে। এ নিয়ে আমাদের চেষ্টা চলছে। নগদ টাকার ব্যবহার যত কমবে, অর্থনৈতিক কার্যক্রম তত বাড়বে। অনলাইনে আমাদের বিনিয়োগ যত বাড়বে, তার ফলে আমাদের কর্মসংস্থান তত বৃদ্ধি পাবে। প্রতি বছর বাংলাদেশের কর্মবাজারে ২০ লাখ মানুষ নতুন করে প্রবেশ করে। যার মধ্যে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ হাজার সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়। চার থেকে পাঁচ লাখ লোক বিদেশে যায়। বাকি লোকদের কর্মসংস্থান দেশের মাটিতেই করতে হবে। এটা করতে হলে বিনিয়োগের বিকল্প নেই।

গভর্নর বলেন, দেশে ব্যাপক মধ্য আয়ের লোকবল তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক কার্যক্রম যত বৃদ্ধি পাবে, উন্নয়ন তত টেকসই হবে। দেশে দুই কোটির বেশি লোক আছে যাদের প্রতি বছরের আয় ১২ হাজার ডলারের বেশি। আমাদের দেশের অর্থনীতির বড় অংশ অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে আসে। স্থানীয় বাজারে বিনিয়োগের বড় সম্ভবনা রয়েছে।

আব্দুর রউফ তালুকদার আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক সেবা এখন অটোমেশনের আওতায় এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া প্রি-ফাইন্যান্স ও রি-ফাইন্যান্স (পুনঃঅর্থায়ন স্কিম)- এর ঋণ বিতরণ হচ্ছে আরটিজিএসের মাধ্যমে। প্রধান ব্যবসাগুলো অনেক আগে থেকেই অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে আটটি সেবা দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে চুক্তি সই করেছি। যত দ্রুত সম্ভব আগামী এক মাসের মাধ্যমে সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে সেবাগুলো বাস্তবে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করবো।

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস সিস্টেম সেবা চালু করে বিডা। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে ১৫০টি সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা বিডার। বর্তমানে বিডা ৬৭টি সেবা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আটটিসহ নতুন করে আরও ১২টি সেবা যুক্ত হলো।

ইএআর/কেএসআর



https://ift.tt/QESGRN3
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/3CdMwJf
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url