শেষ ওভারে রোমাঞ্চ, নো-বল নাটক এবং মোস্তাফিজদের হার

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম যেন রোমাঞ্চের সব পসরা সাজিয়ে বসেছিল। চার-ছক্কার ধুন্দুমার ক্রিকেট তো হলোই, শেষ ওভারে এসে উত্তেজনা ছাড়িয়ে গেলো সব কিছুকে।

৬ বলে দরকার ৩৬ রান। প্রায় অসম্ভব এক সমীকরণ। কিন্তু রভম্যান পাওয়েল প্রথম তিন বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে বসলেন ওবেদ ম্যাকয়কে। তৃতীয় বলটি অনেকটা কোমড়ের ওপর থেকেই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন।

পাওয়েলরা ভেবেছিলেন ‘নো’ ডাকবেন আম্পায়ার। সেটা হলে অবিশ্বাস্য এক জয় ধরা দিতেও পারতো। কিন্তু আম্পায়ার তাতে সাড়া দিলেন না। মাঠে ঘটে গেলো তুলকালাম।

দিল্লি ক্যাপিটালস অধিনায়ক রিশাভ পান্ত বাউন্ডারির বাইরে থেকে মাঠ ছেড়ে চলে আসতে বললেন রভম্যান পাওয়েল আর কুলদ্বীপ যাদবকে। তারা বের হয়ে আসতে চাচ্ছিলেন। পরে বুঝিয়ে শুনিয়ে মাঠে ফেরান আম্পায়াররা। পান্তকে শান্ত করে টিম ম্যানেজম্যান্ট।

শেষ পর্যন্ত আর জয় পাওয়া হয়নি মোস্তাফিজদের দিল্লির। পরের তিন বলে দুই রান নিয়ে শেষ বলে আউট হন পাওয়েল। রাজস্থান রয়্যালস জিতে যায় ১৫ রানে।

২২৩ রানের প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য প্রায় তাড়াই করে ফেলেছিল তারা। পৃথ্বি শ (২৭ বলে ৩৭) আর ডেভিড ওয়ার্নার (১৪ বলে ২৮) করেন উড়ন্ত শুরু। মাঝে ম্যাচটা ‘জীবিত’ রাখেন রিশাভ পান্ত (২৪ বলে ৪৪) আর ললিত যাদব (২৪ বলে ৩৭)।

শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ৩৬ রান। কিন্তু প্রসিধ কৃষ্ণা ১৯তম ওভারে এসে যাদবকে আউট করে উইকেট মেইডেন নিলে বলতে গেলে শেষ হয়ে যায় দিল্লির আশা। শেষ ওভারের নাটক না হলে রাজস্থানের সহজ জয়ই পাওনা ছিল। ৮ উইকেটে ২০৭ রানে থামে দিল্লি।

প্রসিধ ২২ রানে নেন ৩টি উইকেট। ২ উইকেট শিকার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের।

jagonews24

এর আগে জস বাটলারের অতিমানবীয় এক সেঞ্চুরিতে ২ উইকেটে ২২২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় রাজস্থান রয়্যালস।

টাইগার পেসার মোস্তাফিজ নিয়েছেন সবচেয়ে মূল্যবান বাটলারের উইকেটটি। তবে সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়েছেন কাটার মাস্টার।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে শুরু করেন রাজস্থানের দুই ওপেনার দেবদূত পাডিক্কেল আর জস বাটলার। প্রথম তিন ওভারে তারা তোলেন মাত্র ১২ রান।

চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানকে আক্রমণে আনেন দিল্লি অধিনায়ক রিশাভ পান্ত। প্রথম ওভারটা ভালো হয়নি কাটার মাস্টারের। দেবদূত পাডিক্কেলের কাছে টানা তিন বাউন্ডারি হজম করে দেন মোট ১৪ রান।

১২তম ওভারে আবারও মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন পান্ত। দিল্লির দুই ওপেনার পাডিক্কেল আর বাটলার তখন রূদ্ররুপে। ১১ ওভারেই ১০০ পার করে ফেলেছেন জুটিতে। মোস্তাফিজ ওই ওভারে বাটলারের এক বাউন্ডারি হজম করলেও দেন মাত্র ৬ রান।

১৫ ওভারে ১৫৫ রান তোলেন বাটলার-দেবদূত। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে দেবদূতকে (৩৫ বলে ৫৪) ফিরিয়ে জুটিটি অবশেষে ভাঙেন খলিল আহমেদ।এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে জিতে যায় দিল্লি।

ওই ওভারেই আইপিএল ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন বাটলার, ৫৭ বলে। ১৭তম ওভারে মোস্তাফিজ দেন ৯ রান, তৃতীয় বলে চার মারেন সঞ্জু স্যামসন।

১৯তম ওভারে এসে সেট ব্যাটার বাটলারের হাতে টানা দুই বলে চার আর ছক্কা হজম করেন মোস্তাফিজ। ছক্কাটি অবশ্য ক্যাচ হতে পারতো। কিন্তু রভম্যান পাওয়েলের হাতের কাছ দিয়ে সীমানার বাইরে পড়ে।

ওই ওভারের শেষ বলে অবশেষে বিধ্বংসী বাটলারকে তুলে নেন মোস্তাফিজই। লং অনে তার ক্যাচ নেন ওয়ার্নার। ৬৫ বলে ৯ বাউন্ডারি আর ৬ ছক্কায় বাটলারের উইলো থেকে বেরিয়ে আসে ১১৬ রানের ইনিংস।

শেষদিকে ঝড় তুলেন সঞ্জু স্যামসন। শার্দুল ঠাকুরের শেষ ওভারে দুই চার আর এক ছক্কায় ২০ রান তুলে নেন রাজস্থান অধিনায়ক। ১৯ বলে অপরাজিত থাকেন ৪৬ রানে।

এমএমআর/জেডএইচ



from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/FRJTIvP
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url