বরিশালে সড়কে ১০ জন নিহতের ঘটনায় মামলা

বরিশালের উজিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ১০ বাসযাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় বাসচালক আরিফ খানকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।

রোববার (২৯ মে) রাত পৌনে ১০টার দিকে গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. মাহবুব উজ্জল বাদী হয়ে উজিরপুর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮/১০৫ ধারায় বাসচালক আরিফ খানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এজাহারে চালক আরিফ খানের বিরুদ্ধে দ্রুত গতিতে বেপরোয়াভাবে বাস চালিয়ে ১০ যাত্রীর মৃত্যু ও ১৮-২০ জন যাত্রীকে আহত করে ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ করা হয়েছে।

বাসচালক আরিফ খান বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকার মানিক খানের ছেলে। তিনি ঢাকা-ভান্ডারিয়া রুটের যমুনা লাইন পরিবহনের বাসের (নম্বর-ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৯০৪৬) চালক ছিলেন।

মামলার বাদী গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. মাহবুবব উজ্জল জানান, ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে শনিবার রাতে ভান্ডারিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে যমুনা লাইন পরিবহনের একটি বাস। উজিরপুরের সানুহার এলাকা অতিক্রমকালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে থাকা গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে শিশু ও নারীসহ ১০ যাত্রী নিহত হন। আহত হয়েছেন ১৮-২০ জন। দুর্ঘটনাকবলিত বাসের কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বাসটি গতি ছিল অনেক বেশি। আর বাসটি বেপরোয়াভাবে চালানো হচ্ছিল। ধরনা করা হচ্ছে দুর্ঘটনার এটিই অন্যতম কারণ। তাছাড়া দুর্ঘটনার পর পরই চালক পালিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি বাদী হয়ে চালক আরিফ খানের বিরুদ্ধে দ্রুত গতিতে বেপরোয়াভাবে বাস চালিয়ে ১০ যাত্রীর মৃত্যু ও ১৮-২০ জন যাত্রীকে আহত করে ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। মামলায় সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮/১০৫ ধারায় বাসচালক আরিফ খানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আর্শাদ জানান, আরিফ খানকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। আরিফ খানের নাম পরিচয় জানিয়ে বিভিন্ন থানায় বেতার বার্তা পাঠানো হয়েছে। তার গ্রামের বড়ি বাকেরগঞ্জ থানার আওতাধীন এলাকায়। বাকেরগঞ্জ থানার দয়িত্বরত কর্মকর্তাকে আরিফ খানের বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

এদিকে দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জনের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ বেল্লাল হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও এক শিশু রয়েছে। নিহতরা হলেন- পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর ভেটকি এলাকার মো. কুদ্দুস আকনের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম আকন (৩৫), একই এলাকার রাকিব আকনের স্ত্রী তাজনেয়ারা বেগম (২৩), বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজীরাবাদ এলাকার মোবারক আলী বেপারীর ছেলে মো. হালিম মিয়া (৩১), ফরিদপুরের নগরকান্দা সুতারকান্দা এলাকার আওলাদ আলী মোল্লার ছেলে মো. সেন্টু মোল্লা (৫০), বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার সুন্দরকাঠি এলাকার মৃত আবুল কাশেম হাওলাদারের ছেলে মো. রমজান হাওলাদার (৩৮), ঝালকাঠি সদরের নেয়রি এলাকার মো. মনির হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন (৯), উজিরপুরের মুন্ডুপাশা এলাকার মৃত মনোরঞ্জন শীলের ছেলে মাধব শীল (৪৬), বরগুনার গলাচিপা মীরের হাওলা এলাকার তাজেম আলী বেপারীর ছেলে রেজা চোকদার (২৩), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া এলাকার মৃত করিম খানের ছেলে রিপন খান (৪৮) ও বাসের হেলপার বরগুনার কেওরাবুনিয়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদারের ছেলে মো. ইমরান হাওলাদার (২৬)।

দুর্ঘটনায় আহত কয়েকজন উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বাকিরা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সাইফ আমীন/কেএসআর



https://ift.tt/9fVimpH
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/iz9F3fI
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url