রাত ৮টায় বন্ধ হচ্ছে বিপণিবিতান, নজরদারি নেই মহল্লার দোকানপাটে

বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও জ্বালানি সংকট রোধে সারাদেশে রাত ৮টার পর থেকে বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছিল তা অনেকটাই মেনে চলছেন রাজধানীর ব্যবসায়ী। এখন সরকার নির্ধারিত সময়ে ঢাকার অধিকাংশ বিপণিবিতান বন্ধ হচ্ছে। তবে এ নির্দেশনা তোয়াক্কা করছে না অলি-গলি, মহল্লার দোকানিরা।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামীকাল শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত এ নির্দেশনা কিছুটা শিথিল থাকবে। এ সময়ে রাত ১০টা পর্যন্ত বিপণিবিতান ও দোকানপাট খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্র।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাতে সরেজমিনে দেখা যায়, রাত ৮টা বাজতেই বঙ্গবাজারসহ আশপাশের এনেক্সো টাওয়ার, ঢাকা মহানগর সুপার মার্কেট, ফুলবাড়িয়া, সিদ্দিক বাজার, গুলিস্তান এলাকার পাইকারি দোকানপাট বন্ধ শুরু করেন দোকানিরা। রাত ৮টা ৩০ মিনিট বাজতেই দুই-তৃতীয়াংশ দোকান বন্ধ হয়ে যায়। তবে কিছু দোকানে মালামাল ওঠা-নামার কারণে খোলা ছিল।

jagonews24

বঙ্গ বাজারে গার্মেন্টসের ব্যবসায়ী তৌহিদ এলাহি বলেন, সরকারের নির্দেশনার পর থেকে সবাই রাত ৮টার দিকে দোকানপাট বন্ধ করেন। এ বিষয়ে মার্কেট মালিক সমিতির নির্দেশনা রয়েছে। দুই-একটি দোকান বিশেষ প্রয়োজনে বন্ধ করতে কিছু সময় নেয়।

তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে এখন বেচাকেনার সেরা সময়। আগামীকাল থেকে ঈদের আগ দিন পর্যন্ত রাত ১০টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখা জরুরি। মার্কেট সমিতি রাত ১০টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার বিষয়ে একমত রয়েছেন। অঘোষিতভাবে বিষয়টিকে সম্মতি দিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়।

বঙ্গবাজার থেকে রাত পৌনে নয়টায় লল নিউ মার্কেট এলাকার বিপণিবিতানগুলো বন্ধ দেখা গেছে। তবে রাত নয়টায় পুরান ঢাকার বংশালের নাজিরাবাজার এলাকায় গিয়ে অধিকাংশ সাইকেল, মুদি দোকানপাট খোলা দেখা গেছে।

নাইন সাইকেল স্টোরের মালিক শরীফ মিয়া বলেন, গলি-সড়কে রাত আটটার পরও সবাই দোকান খোলা রাখেন। তাই তিনিও রেখেছেন। ঈদকে সামনে রেখে এখন সাইকেলের বাজার ভালো চলছে বলে জানান তিনি।

গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের সই করা চিঠিতে রাত ৮টার পর সারা দেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার খোলা না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

jagonews24

ওই চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ জুন সচিবালয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বৈঠক করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ জুন থেকে রাত ৮টার পর বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে।

বৈঠকে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই), দোকান মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তখন ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে ১০ জুলাই রাত ১০টা পর্যন্ত পর্যন্ত দোকানপাট খালার শিথিল করার অনুরোধ আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অঘোষিতভাবে রাত দশটা পর্যন্ত বিপণিবিতান এবং দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশ শ্রম মন্ত্রণালয়।

তবে হাসপাতাল, রেল স্টেশন, বাস স্টেশন, বিমানবন্দর, হোটেল, নাপিত, ওষুধের দোকান, সিনেমা, থিয়েটার, ক্লাব, মিষ্টি ও ফুলের দোকান, ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাস অফিসসহ অন্যান্য জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এ নিয়মের বাইরে রয়েছে।

এমএমএ/এমআরএম



https://ift.tt/zWq1prD
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/v0w7trZ
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url