শাটার নামিয়ে বেকারির ভেতরে নোংরা পরিবেশে সেমাই তৈরির ধুম

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ময়মনসিংহের তারাকান্দায় লাচ্ছা সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে। এসব সেমাইয়ে ভোক্তাদের আগ্রহও অনেক। তবে ঈদকে সামনে রেখে নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে সেমাই। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে এসব কারখানার বাইরের শাটার বন্ধ করে ভেতরে চলছে সেমাই তৈরির ধুম। শুধু তারাকান্দা উপজেলায় নয়, মহানগর ও জেলার অধিকাংশ সেমাই কারখানার মেঝেতে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ। ফলে এসব সেমাই খাওয়া স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারাকান্দা উপজেলার বিশকা ইউনিয়নের চান্দেরবাজারে বেশ কয়েকটি সেমাই কারখানা রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে গত দুই সপ্তাহ এসব কারখানায় শ্রমিকরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। বাজারে এসব সেমাইয়ের বেশ চাহিদাও রয়েছে। তবে অধিকাংশ কারখানাতে নোংরা পরিবেশ।

বুধবার (৬ জুলাই) চান্দেরবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাইরে থেকে কারখানার প্রবেশপথের শাটার বন্ধ। তবে ভেতরে সেমাই তৈরির ধুম চলছে। ছোট ছোট বেকারি কারখানাগুলোতে ৫-৬ জন শ্রমিক সেমাই তৈরির কাজ করছেন। তবে হঠাৎ এসব কারখানার সামনে গেলে কেউ বুঝতেই পারবে না সেখানে সেমাই তৈরি হচ্ছে।

কৌশলে কারখানার ভেতরে ঢুকে দেখা গেছে, ভেতরে নোংরা পরিবেশ। স্যাঁতস্যাঁতে মেঝে। তার ওপরই সেমাই তৈরির জন্য খামির করে রাখা হচ্ছে। প্যাকিং করার আগে মেঝেতে নোংরা জায়গায় ফেলে রাখা হচ্ছে সেমাই। যারা সেমাই ভাজার কাজ করছেন, তাদের শরীর ঘেমে-নেয়ে একাকার। সেই ঘাম শরীরে নিয়ে আবার তারা খামির বানাচ্ছেন। এমনকি যে তেলে সেমাই ভাজা হচ্ছে, তা কয়েকদিন আগে ভেজে রাখা তেল। এক তেল দিয়ে কয়েকদিন ধরে সেমাই ভাজার কাজ করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, বেকারিপণ্য তৈরি হতো এসব কারখানায়। ঈদ সামনে রেখে সব বাদ দিয়ে শুধু সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। প্রশাসন নজর এড়াতে শাটার নামিয়ে ভেতরে সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। লোডশেডিং এবং তীব্র গরমে ঘেমে-নেয়ে সেই অন্ধকার ঘরের মধ্যে শ্রমিকরা সেমাই তৈরি করছেন। ওই কারখানার ভেতরে আশপাশের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় না।

নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার একজন শ্রমিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে সেমাই তৈরি করি। তবে কারখানার মালিক যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গা না দেন, তাতে তো আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা গরিব মানুষ, এখানে কাজ করেই পেট চলে। সামনে ঈদ, কাজ না করলে পরিবারকে কী খাওয়াবো?’

জানতে চাইলে একটি কারখানার মালিক রুহুল আমিন বলেন, ‘গত দুই ঈদে আমি সেমাই তৈরি করছি। সব ধরনের অনুমোদন নিয়েই সেমাই তৈরি করছি।’

তবে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনের কাগজ দেখতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নেই। তবে অন্য কাগজপত্র দেখানো যাবে না।’

তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজাবে রহমত বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। ঈদের আগেই উপজেলার সেমাই কারখানায় অভিযান চালানো হবে। কেউ যদি অনুমোদন ছাড়া এবং নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি করে বাজারজাত করেন, তবে আইনের আওতায় আনা হবে।’

মঞ্জুরুল ইসলাম/এএএইচ



https://ift.tt/1QF2UKG
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/gQJVrYx
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url