মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধান চায় বিএনপি

সরকারকে অবিলম্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একই সঙ্গে, এই প্রক্রিয়া শুরু করে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের স্বার্থে সরকারের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে সমস্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত রয়েছে।

বুধবার বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সফরকারি জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট ও তার দল ১৪-১৮ আগস্ট বাংলাদেশ সফরে এসে এখানকার মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে গুম, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বাক-স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক নিপীড়ন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নারীর প্রতি সহিংসতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে লিখিত যে বক্তব্য দিয়েছেন তা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, বিরোধীমত, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রকাশিত প্রতিবেদনেরই প্রতিচ্ছবি বলে আমরা মনে করি।

তিনি বলেন, মানবাধিকার হাইকমিশনারের বক্তব্যে দ্ব্যর্থহীনভাবে উঠে এসেছে, গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন মেকানিজম ও তাদের নির্যাতন বিরোধী কমিটি যে উদ্বেগ তুলে ধরেছেন তার অনেকটাই র‌্যাবের ভূমিকা নিয়ে এবং এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতা না থাকা বিষয়ে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, তিনি তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, এই অভিযোগগুলো নিয়ে তিনি বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের কাছে তার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের ওপর জোর দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি নিরাপত্তা সেক্টর সংস্কারের ওপরও জোর দিয়েছেন বলে আমরা দেখলাম। হাইকমিশনার স্পষ্টভাবে বলেছেন, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি গুম, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা এবং বিচারিক রক্ষাকবচ না থাকার অ্যালার্মিং অভিযোগ আছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ঘটনাগুলোর তদন্তে অগ্রগতি না হওয়া এবং ন্যায়বিচারের অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি তিনি তুলে ধরেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দেখলাম, তিনি সরকারকে গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন এবং বিশেষায়িত পদ্ধতি তৈরি করতে আহ্বান করেছেন যারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত নিশ্চিতে সহযোগিতা করার জন্য তার কার্যালয় তৈরি আছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, গুম সংক্রান্ত জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপকে এই বিষয়ে আমন্ত্রণ জানালে তা হবে এটা সমাধানের জন্য সরকারের সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। এছাড়াও, তিনি এখন থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানোর জন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বাছাইয়ে তাদের মানবাধিকার লংঘনে সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পরীক্ষা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনের উপরও জোর দিয়েছেন বলে আমরা দেখলাম।

কেএইচ/এমআরএম



https://ift.tt/4uRy8Av
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/pbcOCQL
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url