কুমিল্লায় ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রীর মামলা

 

‘কুপ্রস্তাবে’ রাজি না হওয়ায় নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোর অভিযোগে কুমিল্লার মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে এক প্রবাসীর স্ত্রী। আমলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলাটি দায়ের করেন এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী।

আদালত সূত্র জানা যায়, মেঘনা থানার শিকিরগাঁও গ্রামের এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী জমির বিরোধ নিয়ে হওয়া মামলার খোঁজ নিতে বেশ কয়েকবার থানায় আসা-যাওয়া করেন। এর সূত্র ধরে ওসি ছমির উদ্দিন ও এসআই মোশাররফ হোসেন তাকে প্রায়ই ফোন করতেন। একপর্যায়ে ওসি ছমির তাকে মেঘনা রিসোর্টে সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। এসআই মোশাররফও প্রায়ই ফোন করে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় দু'জনেই তার ওপর ক্ষুব্ধ হন।

সূত্র আরও জানায়, গত ২৬ জুলাই ওই নারীর বোনের জামাইকে গ্রেফতার করতে যান ওসি ছমির ও এসআই মোশাররফ। সেদিন তিনি মামলার ওয়ারেন্ট দেখতে চাওয়ায় এসআই মোশাররফ তাকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ওসির রুমে নেওয়া হয়। এ সময় রুমের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে ওসি তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং চিৎকার করলে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দেন। এ সময় ওই নারী ওসিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে মারধর করা হয়। চিৎকার শুরু করলে এসআই মোশাররফ তার গলা চেপে ধরেন।

পরে তাকে আবারও অনৈতিক প্রস্তাব দেন দুইজন। পরদিন তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে আদলতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ৮ দিন কারাভোগের পর গত ৩ আগস্ট তিনি কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। পরে ২২ আগস্ট পুনরায় মেঘনা থানায় যান তার নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে এবং ওসি ও এসআইএয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে। তবে, থানা পুলিশ ওই দিন তার মামলা নেননি। এরপর রোববার কুমিল্লার আদতালতে হাজির হয়ে তিনি মামলাটি দায়ের করেন।

এ বিষয়ে প্রবাসীর স্ত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ওসি ছমির ও এসআই মোশাররফের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওইদিন তারা অন্যায়ভাবে আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। আমি এ নির্যাতনের সঠিক বিচারের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।

অভিযুক্ত ওসি ছমির উদ্দিন বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গেলে ওই নারী আমাদের সঙ্গে উগ্র আচারণ করেন এবং আমাদের কর্তব্যরত কাজে বাঁধা দেন। ওয়ারেন্ট দেখালেও তিনি আসামিকে আনতে দেননি। যার প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। তিনি আজ আদালতে যে মামলাটি করেছেন তা সম্পন্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নান জানান, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। অফিসিয়ালি এখনো কোনো কাগজপত্র হাতে পাইনি। পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাহিদ পাটোয়ারী/এমএএইচ/



https://ift.tt/VlvcWPH
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/FhCuOt6
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url