ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা ছাড়তে হবে ড. মোর্শেদ হাসানকে

পত্রিকায় কলাম লেখার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা এবং ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় চাকরি হারানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে বাসা ছাড়ার নোটিশের বিরুদ্ধে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে ওই অধ্যাপককে বাসা ছেড়ে দিতে হবে।

এ বিষয়ে তার করা লিভ টু আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে এদিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

এর আগে গত ৫ জুলাই হাইকোর্টও তার আবেদন খারিজ করেছিলেন। এরপর তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অপসারণ করে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যান্সেলরের কাছে ১১ অক্টোবর আপিল করা হয়।

কিন্তু আপিল দায়ের করার সাত মাস পরও কোনো ফল না পেয়ে তিনি রিট করেছেন। ওই রিটের শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৮ জুন হাইকোর্ট অপসারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে এবং কেন তাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।

অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক।

এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় চলতি বছরের ২৯ জুন বাড়া ছাড়তে এই অধ্যাপককে নোটিশ দেওয়া হয়। সেই নোটিশ স্থগিত চেয়ে তিনি আবেদন করেন।

২০১৮ সালের ২৬ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকের স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় তার লেখা ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে এক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ওই নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুর অবমাননা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের অভিযোগ তোলে ছাত্রলীগ।

এরপর একই বছরের ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়। এ অবস্থায় মোর্শেদ হাসান খানের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে আইনি সুপারিশ করতে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে দায়িত্ব দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।

একই বছরের ২৯ মে অ্যাটর্নি জেনারেল ওই লেখাকে ইতিহাস বিকৃতি বলে উল্লেখ করে শাস্তির সুপারিশ করেন এবং চাকরি থেকে অব্যাহতির কথা বলেন। ওই সুপারিশের পর বিষয়টি অধিকতর পর্যালোচনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এএফএম মেজবাহউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি ‘বিশেষ ট্রাইবুন্যাল’ গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ওই ট্রাইব্যুনালের সুপারিশের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয়। সেটি তাকে ৬ অক্টোবর জানায় কর্তৃপক্ষ।

এফএইচ/ইএ



https://ift.tt/cSaFJHP
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/IdXM0en
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url