কমনওয়েলথ সম্মেলন থেকে রাজা চার্লসের সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী

কমনওয়েথ সম্মেলনে যোগদান শেষে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সংবর্ধনায় যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস ও তার পত্নী ক্যামিলার রাজ্যাভিষেকের আগে সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান বা বিদেশি প্রতিনিধিদের জন্য এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ মে) বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ১০টায়) বার্কিংহাম প্যালেসে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে কমনওয়েথভুক্ত দেশের নেতারা একত্রিত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: লন্ডনে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এর আগে একই দিন স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা) পর্যন্ত অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। এটি ছিল কমনওয়েলথভুক্ত সব দেশের সরকারপ্রধানদের একটি দ্বিবার্ষিক সম্মেলন।

লন্ডনে কমনওয়েলথ সচিবালয় মার্লবোরো হাউসে এ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমনওয়েথ সভাপতি রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকারের প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র

এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ২টা থেকে ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত কমনওয়েল প্রধান রাজা তৃতীয় চার্লস কমনওয়েলথভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন।

আগামীকাল শনিবার (৬ মে) লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠান হবে। সেখানেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদানের কথা রয়েছে।

ওই অভিষেক অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, স্পেন, বেলজিয়াম, জাপান, হাঙ্গেরি, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা উপস্থিত থাকবেন। রাজকীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী জাতীয় শোকের ও অনেক প্রস্তুতির পর ব্রিটেনের কোনো রাজার অভিষেক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন: পরাজয়ের ভয়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর লন্ডনে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছিলেন।

২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের রাজা হন ৭৪ বছর বয়সী তৃতীয় চার্লস। তার মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত হন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে দেশটিতে চারদিনের সরকারি সফর শেষে গত ২৮ এপ্রিল টোকিও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী তার জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের দ্বিতীয় ধাপে হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশীদার হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় এক সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ মে) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ওয়াশিংটন ডিসির ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের পথে যাত্রা করে। রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ওইদিন স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে লন্ডনে পৌঁছান বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।

বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র বোন শেখ রেহানাও তার সঙ্গে রয়েছেন।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ চার্টার্ড ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি১৪০৩) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে জাপান বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা এবং রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার দেয়।

আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-টোকিও

প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরকালে কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্প উন্নয়ন, জাহাজ রিসাইক্লিং, শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়াদি, মেধাসম্পদ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে আটটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি সইয়ের পর একই দিনে তিনি তার জাপানি সমকক্ষ ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। ২৬ এপ্রিল শেখ হাসিনা জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী ২৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য চার জাপানি নাগরিকের কাছে ‘ফ্রেন্ডস অফ লিবারেশন ওয়ার অনার’ হস্তান্তরের পাশাপাশি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ও কমিউনিটি সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।

টোকিও সফরকালে প্রধানমন্ত্রী জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশির পাশাপাশি জাইকা, জেট্রো, জেবিক, জেবিপিএফএল ও জেবিসিসিইসি নেতাদের সঙ্গে একাধিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেন। এছাড়াও তিনি জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রী আকি আবে এবং জাপানি স্থপতি তাদাও আন্দোর সঙ্গেও বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন: মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

লন্ডনে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ নেতাদের একটি অনুষ্ঠান ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান এবং মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক ও একটি নাগরিক সংবর্ধনাসহ কিছু পার্শ্ব ইভেন্টে যোগ দেন।

দুই সপ্তাহের সরকারি সফর শেষে আগামী ৯ মে লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

এমকেআর



https://ift.tt/rnVJktu
from jagonews24.com | rss Feed https://ift.tt/MkZJUQV
via IFTTT
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url